আজ (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে টেকসই উন্নয়নে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ভূমিকা নিয়ে “Sustainable Development through 4IR Technologies” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিসিসির ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম এর মাধ্যমে যুক্ত থেকে সেমিনারের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিসিসির পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) (গ্রেড-৩), জনাব মোঃ জফরুল আলম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন বিসিসির ম্যানেজার (সিস্টেমস) (গ্রেড-৪) জনাব মোঃ গোলাম রববানী, এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর জেলার নবাগত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব মো: সোহরাব হোসেন।
দিনব্যাপী এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন, অধ্যক্ষ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ জনাব মোঃ আককাছ আলী সেখ। বিসিসি ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক জনাব অলিউল্লাহ আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে সেমিনারটি সঞ্চালিত হয়।
প্রধান অতিথি বিসিসির প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক জনাব মোঃ জফরুল আলম খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিসিসি আইসিটি সেক্টরে পলিসি নির্ধারণ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কাজ করছে। বিসিসি ফরিদপুর কার্যালয় থেকে যেকোনো আইসিটি প্রশিক্ষণ, নেটওয়ার্ক সেবা, সফটওয়্যার টেস্টিং, ডিজিটাল সার্টিফিকেট, টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন তৈরি বা সরকারি কার্যালয়সমূহের যেকোনো আইসিটি বিষয়ক সেবা প্রদান করা হয়। বিসিসির ম্যানেজার (সিস্টেমস), জনাব মোঃ গোলাম রববানী তাঁর বক্তব্যে ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) এবং অটোমেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি সেবা প্রসারের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, টেকসই উন্নয়নের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রযুক্তির উন্নয়নকে সঠিকভাবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কাজে লাগানো। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে টেকসই উন্নয়নে বিভিন্ন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি ব্যবহার করা যায় তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
এ আয়োজনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং পরিবর্তন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে এই পরিবর্তনগুলোকে টেকসই উন্নয়নে রূপান্তরিত করতে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আমরা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে যুক্ত হয়েছি। এর সঠিক ব্যবহারে আমাদের Productivity ও Efficiency বাড়বে।
এছাড়া ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ভূমিকা তুলে ধরেন এবং বলেন, চতুর্থ ও পঞ্চম শিল্প বিপ্লব নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। গার্মেন্টস সেক্টরে অটোমেশনে রোবোটিকস প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে এগুলো প্রয়োগ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সেমিনারের আলোচক অধ্যক্ষ জনাব মোঃ আককাছ আলী সেখ বলেন, ১০ বছর পরে আমরা কোন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে থাকব তা নির্ভর করে বর্তমানে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের কিভাবে প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করছি।
সেমিনারে উপস্থিত সকলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আলোকে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত দিক থেকে উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে গভীর আলোচনা করেন।
উক্ত সেমিনারে জেলা পরিসংখ্যান অফিস, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, জেলা সঞ্চয় অফিস, পোস্টমাস্টার জেলারেলের কার্যালয়, জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়, জেল সুপারের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা মহিলা বিষয়ক অফিস এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৩০ জন অফিস প্রধান/ প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ।